খেলাধুলার উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো কি কি জেনে নিন।
সম্মানিত পাঠক, আসসালামু আলাইকুম। আপনারা জেনে আনন্দিত হবেন যে, আজকের এই পোস্টে আমি খেলাধুলার উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো কি কি। এই সম্পর্কে আলোকপাত করতে যাচ্ছি, এবং ব্যাডমিন্টন কোন দেশের জাতীয় খেলা, সে সম্পর্কেও আপনাদের বিস্তারিত জানাবো।
খেলাধুলা এমন এক শরীরচর্চা যা আমাদের শরীরের অঙ্গ-প্রতঙ্গ গুলো ভালো রাখে। এই আর্টিকেলটিতে আমরা চেষ্টা করেছি খেলাধুলার উপকারিতা ও অপকারিতা, শিশুদের খেলার প্রয়োজনীয়তা, ব্যাডমিন্টন কোন দেশের জাতীয় খেলা। এছাড়া আরো বেশ কিছু পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করেছি। তো চলুন আমরা সেই সকল বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেই।
ভূমিকাঃ
মানুষ প্রতিনিয়ত ছুটেই চলেছে সাফল্যের পিছনে টাকার পিছনে। কিন্তু এগুলোর যে একটা শেষ রয়েছে এটা মানুষ ভুলে গিয়েছে। এগুলোর কারণে মানুষ দিন দিন অসুস্থ হয়ে পড়েছে, একটি শিশু জন্মের পরে তার শারীরিক ও মানসিক বিকাশের প্রধান হচ্ছে খেলাধুলা।
শিশুরা খেলাধুলার মাধ্যমে তাদের বিশ্ব সম্পর্কে অভিজ্ঞতা লাভ করে এবং শিখে;এবং খেলাধুলা প্রত্যেক মানুষের দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেয়। খেলাধুলার মাধ্যমে তরুণদের মনে প্রতিযোগিতার মনোভাব সৃষ্টি হয়। আপনি বিভিন্ন রকমের খেলাধুলা করতে পারেন যেমনঃ ফুটবল, ক্রিকেট, টেবিল টেনিস, হকি, ইত্যাদি। এখনকার শিশুরা, পড়ালেখা কিংবা কাজের চাপে খেলাধুলা তেমন বেশি সুযোগ পায়না।
কিন্তু গবেষণা বলছে, খেলাধুলার মধ্যে যে আনন্দ রয়েছে সেটা অন্য কোথাও আর নেই। যেকোনো খেলায় সুস্থ দেহ সুন্দর মন গঠনে অনেক ভূমিকা পালন করে, তো বন্ধুরা আসুন আমরা সময় বাহির করে। কিছু সময় খেলাধুলা করি, তাহলে আমাদের স্বাস্থ্য ও মন অনেক ভালো থাকবে।
খেলাধুলার উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো কি কি জেনে নিনঃ
ইন্টারনেটের এই যুগে আমরা স্মার্টফোনের গেম খেলতে খেলতে সত্যিকারের খেলা প্রায় ভুলতেই বসেছি! কিন্তু খেলাধুলা করার দেহের জন্য যেমন দরকারি তেমন মনের সুস্থতায়ও উপকারী। আর হ্যাঁ খেলাধুলা উপকারিতা যেমন রয়েছে, তেমন কিছু অপকরিতা গুলো রয়েছে-আপনারা বিভিন্ন রকমের খেলাধুলা করতে পারেন।
যেমনঃ ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন, দাবা, ইত্যাদি। তাই অনেক দেশে খেলাধুলা কে কিছু কিছু রোগের ঔষধ হিসেবে গ্রহণ করা হয়। চলুন খেলাধুলার উপকারিতা গুলো সম্পর্কে আমরা জেনে নেই।
- খেলাধুলার উপকারিতাঃ
- হৃদপিন্ডের সুস্থতা দান করে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে।
- কোলেস্টেরল লেভেল ঠিক রাখে।
- রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
- মাংসপেশী ও হাড় গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
- নিজেকে ও অন্যকে শ্রদ্ধা করতে শেখায়।
- খেলাধুলার মাধ্যমে যোগাযোগ বৃদ্ধি হয়।
- খেলাধুলার মাধ্যমে ভালো বন্ধুত্ব তৈরি হয়।
খেলাধুলার উপকারিতা ও অপকারিতাঃ
সব কিছুরই যেমন উপকারীর দিক রয়েছে, তেমন কিছু অপকারিতাও রয়েছে। স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন- যা কিছু প্রয়োজনের চেয়ে অধিক তাই বিষ। সুতরাং বলা যায় অত্যাধিক খেলাধুলা শরীরের ক্ষতি করতে পারে, শরীরে আঘাত লাগতে পারে। খেলাধুলা করার আগে খেলাধুলার নিয়ম-কানুন গুলো ভালোভাবে জানা উচিৎ।
তবে খেলাধুলার অপকারিতার থেকে উপকারিতাই অনেক বেশি, তবে সবাই সাবধানে নিয়ম মেনে যদি খেলাধুলা করেন তাহলে আপনাদের শরীরে কোন ক্ষতি হবে না।
ব্যাডমিন্টন কোন দেশের জাতীয় খেলাঃ
প্রিয় বন্ধুরা, আপনারা কি জানেন? ব্যাডমিন্টন কোন দেশের জাতীয় খেলা। তো চলুন আমরা জেনে নিই মালয়েশিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ফুটবল হলেও। কিন্তু ব্যাডমিন্টন খেলা হচ্ছে মালয়েশিয়ার জাতীয় খেলা। এই খেলাটি ২০০০ বছরেরও বেশি সময় আগের বলে মনে করা হয়। তবে আধুনিক সংস্করণটি ১৮৭৩ সালের ইংল্যান্ডের গুলচেষ্টারশায়ারে আবিষ্কৃত হয়েছিল বলে মনে করা হয়।
ডিউক অফ বিউফোরট, যিনি ভারত থেকে খেলাটিকে ফিরিয়ে এনেছিলেন। ১৯৩৪ সালে আইবিএফ- এখন ব্যাডমিন্টন ওয়াল্ড ফেডারেশন- বি ডব্লিউ এফ, প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই খেলাটি সারা বিশ্বের মানুষই প্রায় খেলে থাকে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশেও প্রচলিত জনপ্রিয় খেলা গুলোর মধ্যে ব্যাডমিন্টন অন্যতম খেলা।
শীতকালে সময় কাটানোর জন্য উপযুক্ত একটি খেলা হল ব্যাডমিন্টন। ব্যাডমিন্টন খেলাই সবগুলো নিয়ম মেনে খেলতে হবে ব্যাপারটা এমন নয়, মুখ্য বিষয় হল খেলার আনন্দটা উপভোগ করা। যেকোনো খেলায় সুস্থ দেহ সুন্দর মন গঠনে অনেক ভূমিকা পালন করে।
ফুটবল খেলার উপকারিতাঃ
নিয়মিত খেলাধুলা করলে আমাদের শরীরের সাথে সাথে মন কেউ অনেক উৎফুল্ল করে। ফুটবল খেলার উপকারিতা হলো বিভিন্ন মানসিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় যেমনঃ স্টেস ডিপ্রেশন, ফুটবল মাঠে থাকার সময় মানুষ এসব মানসিক সমস্যা থেকে দূরে থাকে।
এছাড়া ফুটবল খেলার মাধ্যমে নিজের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায় ও উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে। এবং ফুটবল খেলাকে তাই বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা বলা হয়। তৃতীয় দশকে বিশ্বকাপ ফুটবলের আসরটি প্রথমবারের মতো বসে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ উরুগুয়েতে 1930 সালে।
প্রফেশনাল ফুটবল খেলার বাহিরে ছেলে বুড়ো সবাই এই খেলা খেলে থাকে। ফুটবল খেলার মাধ্যমে মানুষের দেহের শারীরিক ও মানসিক উপকার সাধিত হয়ে থাকে। মানব দেহের জন্য ফুটবল খেলার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
শিশুদের খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তাঃ
পড়ালেখা কিংবা কাজের চাপে খেলার সুযোগ পায়না এখনকার শিশুরা। যতটুকু অবসর সময় পাওয়া হয়, তা এখনকার ছেলেমেয়েরা মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, নিয়ে গেম খেলতে ব্যস্ত থাকে। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুদের খেলাধুলা করা বাধ্যতামূলক।
খেলাধুলার ভেতরে যে আনন্দ থাকে তা শিশুদের মনে পরিপূর্ণ বিকাশে সহায়ক। তো চলুন শিশুদের খেলা ধুলার প্রয়োজনীয়তা গুলো জেনে নেই।
- খেলাধুলায় উপস্থিত বুদ্ধি বৃদ্ধি পায়।
- শারীরিক বৃদ্ধি স্বাভাবিক রাখতে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
- পরিকল্পনা, দূরদর্শিতা, ও পড়াশোনার প্রতি শিশুর আগ্রহ জাগিয়ে তুলতে কয়েকজন বন্ধু-মিলে একসাথে খেলার পরিবেশ অনেকখানি সাহায্য করে।
- খেলাধুলার মাধ্যমে শিশুরা পড়াশুনা, আচার - আচরণ, বুদ্ধিমত্তাতে এগিয়ে থাকে।
- সকলের সাথে মিলে মিশে খেললে সামাজিক আচরণ, সম্পর্ক দৃঢ় হয়।
- কল্পনাশক্তি, রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা, চিন্তাশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
দাবা খেলার উপকারিতাঃ
কথায় আছে দাবা খেলো বুদ্ধিমান হও, আসলে বিজ্ঞান বলছে। মস্তিষ্ক যদি চাঙ্গা থাকে, তাহলে আয়ু চোখে পড়ার মতো বৃদ্ধি পায়। আর ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধির ক্ষেত্রে, দাবার কোন বিকল্প হয় না বললেই চলে! তাইতো চিকিৎসকেরা সুস্থ থাকতে দাবা খেলার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। মানুষের বয়স হলে যে স্মৃতিশক্তি দুর্বলতায় ভোগে, ডিমেনশিয়ায় ভোগে, তা থেকে বাঁচার একটা উপায় দাবা খেলা।
যারা দাবা খেলে, তারা যারা দাবা খেলে না, তাদের চেয়ে বুদ্ধিমান হয়-গবেষণা এমনটাই বলছে। ফলে অ্যালজাইমারের, এর মতো রোগের আশঙ্কা অনেকটাই কমে যেতে পারে, এইখেলা নিয়মিত খেললে। আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়; দাবা খেলার সময় নানা ধরনের মানসিক অবস্থার মধ্য দিয়ে খেলোয়াড়দের যেতে হয়। চলুন দাবা খেলার উপকারিতা গুলো জেনে নেই।
একাগ্রতা বাড়াতে সাহায্য করেঃ-;
কোন একটি বিষয় নিয়ে মন দিয়ে ভাবা, একাগ্রতার ক্ষমতা বেড়ে যেতে পারে দাবা খেললে। ফলে কর্ম ক্ষেত্রে বা পড়াশোনার ক্ষেত্রে কিছুটা হলে সুবিধা পাওয়া যায়। এই কারণে অল্প বয়সীদের দাবা খেলানোর পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে-;
গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত দাবা খেললে স্মৃতিশক্তি বাড়তে পারে এর ফলে মস্তিষ্কের নানা অংশের কর্ম ক্ষমতা বেড়ে যায়। বিচারবুদ্ধির পরিমাণ বাড়তে পারে দাবা খেললে। সেই হিসাবে অংকের সমাধান করার ক্ষমতা ও সামান্য বাড়বে এই খেলার অনুশীলন করলে।আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখে-;
দাবা খেলার সময় নানা ধরনের মানসিক অবস্থার মধ্যে দিয়ে খেলোয়াড়দের যেতে হয়। আর সে কারণেই আবেগ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা তৈরি হয়ে যায় নিজে নিজেই।বুদ্ধি বাড়াতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে-;
কোন সমস্যার মধ্যে পড়লে কি করে তার সমাধান করা যায়, কি করে সেখান থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, সেই বিচার বুদ্ধির পরিমাণ বাড়তে পারে দাবা খেললে।চাপ সহ্য করার ক্ষমতা বাড়ায়-;
প্রতিপক্ষ যখন চাপে রাখে, এই খেলার মাধ্যমে বোঝা যায়। মাথা ঠান্ডা রেখে চাল দিলে অনেকটাই সুবিধা লাভ করা যায় এবং খেলায় জয়ী হওয়া যায়।সমস্যা সামলানোর ক্ষমতা বাড়ে-;
এই খেলায় প্রতিপক্ষ প্লেয়ার আপনাকে প্রতিটা চালে চালে, সমস্যায় ফেলবে। আপনি যখন অভ্যস্ত হয়ে যাবেন, তখন আপনি অটোমেটিক সমস্যা গুলো সামলানোর ক্ষমতা বাড়বে।লেখক এর মন্তব্যঃ
আমার এই আর্টিকেলটিতে আমি চেষ্টা করেছি খেলাধুলার উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো কি কি? ব্যাডমিন্টন কোন দেশের জাতীয় খেলা, ও ফুটবল খেলার উপকারিতা, শিশুদের খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা, দাবা খেলার উপকারিতা, ইত্যাদি বিষয়ে আপনাদের সঠিক তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করছি আপনাদের অনেক উপকারে আসবে।
আমার লিখাটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই একটি মন্তব্য করুন। আর অবশ্যই আপনার পরিচিত বন্ধুবান্ধবের সাথে শেয়ার করুন, যাতে তারাও পড়ে উপকৃত হতে পারে। (ধন্যবাদ) রাত্রি গ্রুপ, এর সাথে থাকার জন্য।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url