কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় জেনে নিন।

প্রিয় পাঠক, কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় সম্পর্কে আমরা আজকে আপনাকে জানাবো। কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ গুলো সম্পর্কেও আমরা আজকে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করবো। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক।
কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় জেনে নিন।
আমাদের আর্টিকেলটিতে আমরা আলোচনা করেছি, কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে, দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের লক্ষণ, ইনফেকশনের লক্ষণ, কিডনি পরিষ্কার করে এই নয় খাবার। এছাড়া আরো বেশ কিছু পয়েন্ট নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। তো চলুন সে সকল পয়েন্ট সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায়।

কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় সম্পর্কে আপনি জানতে চাচ্ছিলেন, কিডনিতে সমস্যা হলে আপনি সহজে ধরতে পারবেন না। কারণ কোন লক্ষণ আপনার সামনে আসবে না। তাই মাঝে মাঝে পরীক্ষা করে নেওয়া ভালো। যাদের ৫০ পার হয়েছে তাদের উচিত বছরে দুবার পরীক্ষা করানো। 
ভারতের ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশন এর তথ্য থেকে জানা যায়, এশিয়ার ও জিএফ আর-এর মতে দুটো সিম্পল টেস্ট করালে ধরা পড়বে আপনার কিডনি ঠিকঠাক কাজ করছে কিনা।

এসিআরঃ এটি অ্যাল্বুমিন ও ক্রিয়েটিনিনের অনুপাত। অ্যাল্বুমিন হলো বিশেষ ধরনের প্রোটিন। মূত্রে অ্যাল্বুমিন আছে কিনা, পরীক্ষা করে সেটাই দেখা হয়। আমাদের শরীরের জন্য কঠিন অত্যন্ত জরুরী। যে কারণে রক্তে প্রোটিন থাকা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু এই প্রোটিন কখনোই মূত্রে থাকার কথা নয়। 

যদি মূত্র পরীক্ষায় প্রোটিন পাওয়া যায় তার মানে হল কিডনি ঠিকঠাকভাবে রক্তকে ছাঁকতে পারছে না। তাই ইউরিন টেস্টে প্রোটিন পজিটিভ হলে, নিশ্চিত হতে এনএফআর করাতে হবে। যদি তিন মাস বা তার বেশি সময় ধরে রেজাল্ট পজিটিভ হয়, তা কিডনির অসুখের অভ্যাস।

জি এফ আরঃ কিডনিতে সমস্যা দেখা দিলে তা রক্ত থেকে ক্রিয়োটিনিন অর্থাৎ বর্জ্য পদার্থ ঠিকমতো বের করে দিতে পারেনা। তবে, এই ক্রিয়োটিনিন পরীক্ষা হলো প্রথম ধাপ। এরপর জিএফ আর দেখতে হবে। সেই রেজাল্ট দেখে ডাক্তার বুঝতে পারবেন কিডনি কেমন কাজ করছে। 

রক্তের এমন টেস্ট করার পর ডাক্তার যদি দেখে যে রক্তে ক্রিয়োটিনিন স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি, তখন চিকিৎসকরা কিডনির অবস্থা আরো ভালোভাবে বুঝতে রোগীর অন্য উপসর্গ অনুযায়ী চার ধরনের ক্রিয়োটিনিনের একটি বা একাধিক টেস্ট করতে দেন।

কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ।

কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ গুলো আমরা জানবো। আমাদের শরীরের খুব গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ কিডনিতে সংক্রমণ হওয়া বড় রোগেরই আভাস দেয়। কিডনি ওকেও হয়ে যেতে পারে এই ইনফেকশন থেকে। আর কিডনি অকেজো হয়ে গেলে পুরো শরীরই অকেজো হয়ে পড়তে পারে। সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে অবশ্যই এই অসুখ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।
ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণে কিডনির ইনফেকশন হয়। এতে কোমর ব্যথা, ঝালালো গন্ধের প্রসাব, জল বোধ করার মত কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে। ডাক্তারের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ হয় তো সেবন করতে হতে পারে আপনার। এ সময় ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার ও ফল বেশি খেতে পরামর্শ দিন ডাক্তাররা।

এবার জেনে নিন কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণসমূহঃ

জ্বর, পিঠে বাজে কোন এক পাশে ব্যথা, পেটে ব্যথা, মাথা ঘোরা, বমি ভাব, প্রসবের জ্বালাপোড়া ও পরিমাণে কম হওয়া, প্রসবের রং গারো হয় ও গন্ধ থাকে এবং মাঝে মাঝে প্রসবের সঙ্গে রক্ত যেতে পারে। যদি এসব লক্ষণ প্রকাশ পায় তবে দেরি না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। পাশাপাশি ঘরোয়া ভাবেও কিডনি স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নিম্নোক্ত উপায়গুলো মানতে পারেন-

  • ১। প্রচুর পানি পান করতে হবে। এক কথায় পানির কোন বিকল্প নেই সুস্থ থাকতে। এতে কিডনির সংক্রমণ থেকে ক্রমশ নিষ্ঠা পাবেন। এছাড়াও প্রসাব বেশি হওয়ায় জ্বালাপোড়া ও গন্ধ আর হবে না। প্রতিদিন অন্তত আট গ্লাস পানি পান করুন। 
  • ২। ক্য়ানবেরির জুস নিয়মিত খেলেনিয়মিত খেলে প্রসাবের সংক্রমণ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে প্রমাণিত যে, ক্য়ানবেরির রস মূত্রনালীর সংক্রমণের উপশম ঘটায়। এতে কিডনির সংক্রমণ ক্রমশ কমে যায়।
  • ৩। কফিও অ্যালকোহল মুক্ত রাখুন নিজেকে। কিডনি শরীরের এক ছাকনি হিসেবে কাজ করে। শরীর থেকে সমস্ত টক্সিন দূর করে কিডনি। তবে কফিও অ্যালকোহল পান করলে কিডনির ইনফেকশন আরো বাড়বে। এছাড়াও অ্যান্টিবায়োটিকের সঙ্গে অ্যালকোহলের সমন্বয় ঘটে না কখনো। এর জন্য এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
  • ৪। ব্যথার ওষুধ না খেয়ে বরং যে স্থানে ব্যথা সেখানে গরম সেক দিতে হবে। এতে ব্যথা থেকে মুক্তি পাবেন। ব্যথার ওষুধ খেলে এর ক্ষতিকর প্রভাব আবারও কিডনির সংক্রমণ বাড়তে পারে। কিছুক্ষণের জন্য ব্যথা কমালেও এসব ওষুধ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এজন্য ঘরোয়া উপায় কিডনির সংক্রমণ থেকে বাঁচতে এসব উপায় মেনে চলুন।

কিডনির সমস্যা হলে কোথায় কোথায় ব্যথা হয়।

আপনার অনেকেই কিডনির সমস্যা হলে কোথায় কোথায় ব্যথা হয় এই সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। সাধারনত আমাদের শরীরের ডান পাশে, বাম পাশে বুকের পাঁজর এবং কোমরের হাড়ের মাঝখানে কিডনি থাকে। এই জায়গায় ব্যথা হলে ধরে নিতে পারেন কিডনির সমস্যা। কিডনি জনিত ব্যথা সাধারণত মেরুদন্ড থেকে একটু দূরে ডান বা বাম পাশে হয়। 
এটি পেছনের পাঁজরের নিচের অংশে অনুভূত হয়। এই ব্যথা নড়াচড়া করে এবং কোমরের দুই পাশেও যেতে পারে। এই ব্যাথা থেকে থেকে আসে, শোয়া-বসা বা কোন কিছুতেই আরাম মেলে না। কিডনি ব্যথা সাধারণত কোমরে, পাজরে, হিপ জয়েন্টে, উপরের পেটে, উরুর ভেতরে হয়ে থাকে। 

কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীর অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দেয় যেমন-পেট ব্যথা হওয়া, প্রসবের পরিমাণ কমে যাওয়া, প্রসবের সাথে রক্ত আসা, বমি, বমি হওয়া, জ্বর আসা, শরীরের বিভিন্ন জায়গা ফুলে যাওয়া, এগুলো লক্ষণ যদি কোন ব্যক্তির শরীরে দেখা যায়। তাহলে ঐ ব্যক্তিকে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের লক্ষণ ।

দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের লক্ষণ গুলো কি কি। আজকে আলোচনা করব, আশা করি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়লে বিষয়গুলো বুঝতে পারবেন। মানবদেহের প্রাণী ও লবণের ভারসাম্য রক্ষা, দেহের পুষ্টি আহরণ, বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশন-যেকোন কাজেই কিডনির ভূমিকা অপরিহার্য। 
কিডনির দীর্ঘমেয়াদি রোগ যেমন জীবনযাত্রার মান কমিয়ে দেয়, তেমনি বেঁচে থাকলেও ফেলে দেয় দুশ্চিন্তায়। তাই কিডনি রোগের লক্ষণ নির্ণয় করতে পারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

জেনে নিন কিডনি রোগের লক্ষণ সম্পর্কে,
বারবার প্রসাব হওয়াঃ যদি প্রায়ই প্রসাব করার প্রয়োজন অনুভব হয়, বিশেষ করে রাতে, এটি কিডনি রোগের লক্ষণ হতে পারে। যখন কিডনির ফিল্টার গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন এটি প্রসব করার তাগিদ বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। পুরুষদের ক্ষেত্রে কখনো কখনো এটি মূত্রনালীর সংক্রমণ বা বেড়ে যাওয়া পোস্টেটের এর লক্ষণও হতে পারে।ডায়াবেটিস ও প্রসব বৃদ্ধির একটি কারণ, যা পরে কিডনির রোগ সৃষ্টি করে। দীর্ঘমেয়াদি কিডনির রোগে এক সময় প্রসাবের পরিমাণ কমে যায়।

  • প্রসবের রক্তের উপস্থিতিঃ পর্যাপ্ত পরিমান পানি পান করার পরও যদি প্রসবের রং গাঢ় থাকে, সেটা পোষাবে রক্ত বের হওয়ার কারণে হতে পারে। এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। স্বাস্থ্যকর কিডনি সাধারণত রক্ত থেকে বর্জ্য ফিল্টার করার সময় শরীরের রক্তের কোষগুলো আলাদা করে রাখে। কিন্তু যখন কিডনির ফিল্টারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন এই রক্তকণিকাগুলো প্রসাবেরমধ্যে আসতে শুরু করে। কিডনি রোগ ছাড়াও প্রসাবে রক্ত আসা যে কোন টিউমার, কিডনিতে পাথর বা সংক্রমনের নির্দেশক হতে পারে। 
  • প্রসাবে ফেনা হওয়াঃ কিডনি সাধারণত ফিল্টার করে প্রয়োজনীয় আমিষ শরীরে ধরে রাখে। ডিমের সাদা অংশ ফ্যাটালে যেরকম ফেনা তৈরি হয়, প্রসাবে সেইরকম ফেনার উপস্থিতি কিডনি রোগের আশঙ্কা তৈরি করে। এই ফেনার উপস্থিতি মানে হলো কিডনি দিয়ে আমিষ (এলবুমিন) বের হয়ে যাচ্ছে। কিডনির কাঠামোর ক্ষতির কারণে এমন হয়।
  • শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে যাওয়াঃ শরীর থেকে প্রসাবের মাধ্যমে আমিষ বের হয়ে গেলে রক্ত ধরে রাখতে পারেনা। ফলে সেই তরল ক্রোশের ফাঁকে ফাঁকে জমা হয়ে ফোলা ভাব তৈরি করে; বিশেষ করে সকালবেলা পায়ের পাতা, মুখমন্ডল ও চোখের চারপাশে ফুলে থাকা এর লক্ষণ হতে পারে।
  • ক্লান্তি, অবসাদ ও অমনোযোগিতাঃ কিডনির কার্যকারিতা মারাত্মকভাবে কমে যাওয়ার ফলে রক্তে টক্সিন ও বর্জ্য পদার্থ জমা হতে পারে। এতে ক্লান্তী অবসাদবোধ হতে পারে। এ অবস্থা কোন কাজে মনোনিবেশ করা খুব কঠিন করে তুলতে পারে।
  • রক্তস্বল্পতাঃ কিডনির রোগের কারণে বোনম্যারো ক্ষতিগ্রস্ত হয়, রক্ত উৎপাদনের প্রয়োজনীয় হরমোন কমে যায়। ফলে দেখা যায় রক্ত শূন্যতা। দূর্বলতা ও বমি ভাব রক্তশূন্যতার লক্ষণ।
  • ঘুমের সমস্যাঃ যখন কিডনি সঠিকভাবে শরীরের তরল পদার্থ ফিল্টার করতে পারেনা, তখন বিষাক্ত পদার্থ প্রসবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে রক্তে থেকে যায়। এটি ঘুমাতে অসুবিধা করতে পারে। সুস্থ মানুষের তুলনায় দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে স্লিপ অ্যাপনিয়া বেশি দেখা যায়-ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা যার অন্যতম লক্ষণ।
  • শুষ্ক ত্বক ও চুলকানিঃ শুষ্ক ত্বক ও চুলকানি খনিজ লবণের অসামঞ্জস্য এবং হাড়ের রোগের লক্ষণ হতে পারে, যা প্রায়ই দীর্ঘমেয়াদী কিডনি রোগের লক্ষণ। যখন কিডনি আর রক্তে খনিজ এবং পুষ্টির সঠিক ভারসাম্য রাখতে অক্ষম হয়, তখন তা ত্বকের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।

কিডনি পরিষ্কার করে এই ৯ খাবার।

কিডনি পরিষ্কার করে এইরকম নয়টি খাবার সম্পর্কে আমরা আজকে আপনাকে জানাবো। আপনি যা খাবেন তাই আপনার স্বাস্থ্যে প্রতিফলিত হবে। এবং আর যে কোন অঙ্গের মত কিডনির সুরক্ষায়ও বিশেষ কিছু খাবার দরকার হয়। স্বাস্থ্যবান হৃদপিন্ডের মতোই একটি স্বাস্থ্যবান কিডনি থাকাটাও জরুরি। কিডনির প্রধান কাজ হলো দেহ থেকে বর্জ্য বের করে দেওয়া।

এবং ক্ষতিকর টক্সিন বা বিষ অপসারণ এর মাধ্যমে দেহ থেকে অতিরিক্ত পানি বের করে দেওয়া। এমনই গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গকে সুস্থ রাখার জন্য সঠিক কিডনির জন্য উপকারী খাদ্যাভ্যাসও জরুরী। এখানে রইলো এমনি নয় খাদ্যের তালিকা যেগুলো কিডনি সুরক্ষায় নিয়মিত খেতে হবে।

  • ১। সবুজ শাকসবজি
নিয়মিত সবুজ শাকসবজি খেতে হবে। বেশিরভাগ শাকসবজিতে ভিটামিন সি, কে, ফাইবার ও ফলিক এসিড থাকে। এগুলো রক্তচাপ কমায়, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে এবং কিডনি জটিলতা কমায়।
  • ২। ক্যানবেরি জুস
চেরির মত ক্যানবেরিতেও রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি ও ম্যাগনেসিয়াম। এই দুটি উপাদান কিডনির ক্ষমতা বাড়তে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে এটি কিডনিও পরিষ্কার করে, এছাড়া কিডনিতে পাথর জমার ঝুঁকিও কমে যায়।
  • ৩। হলুদ
এলার্জি থেকে ত্বকের রক্ষা করা ত্বককে পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি কিডনির রক্ষাও করে হলুদ। নিয়মিত হলুদ খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমে। সেই সঙ্গে কিডনিও পরিষ্কার করে। এতে থাকা কারকুমিনে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান কিডনি রোগ ও পাথর জমা হওয়া রোধ করে।
  • ৪। আপেল
প্রচলিত আছে প্রতিদিন একটা আপেল খান আর ডাক্তারকে দূরে রাখুন। কথাটা কিডনির ক্ষেত্রেও সত্য। আপেল উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার, এতে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি আছে যা বাজে কোলেস্টেরল দূর করে হৃদরোগ প্রতিরোধ করে থাকে। এছাড়া এটি ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। প্রতিদিন এক গ্লাস আপেলের জুস খাওয়ার চেষ্টা করুন।
  • ৫। রসুন
রসুন ইনফ্লেমেটরি এবং কোলেস্টেরল কমাতে অনেক বেশি কার্যকরী। এতে আন্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান আছে যা দেহের প্রধান দূর করে থাকে। তবে রান্না করে খেলে এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায় না। ভালো হয় সকালে খালি পেটে কাঁচা রসুন খাওয়া, এটি হার্ট ভালো রাখার পাশাপাশি কিডনিকেও ভালো রাখে।
  • ৬। ড্যান্ডেলিয়ন
এটি হল এক ধরনের বন্য হলুদ ফুলের গাছ। এর মূল এবং পাতা শুকিয়ে চা বানিয়ে খেতে হয়। প্রসবের পরিমাণ বাড়ায় এবং দেহ থেকে অতিরিক্ত পানি বের করে দেয়। এছাড়া পেটে স্ফীতি কমায়। এটি প্রাকৃতিকভাবে কিডনিকে পরিষ্কার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • ৭। অলিভ অয়েল
একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে প্রতিদিনের রান্নায় অন্যান্য তেলের চেয়ে অলিভ অয়েল ব্যবহার করা বেশি স্বাস্থ্যকর। এতে অলিক এসিড,অ্যান্টি- ইনফ্লামেটরি ফ্যাটি এসিড আছে যা কিডনি সুস্থ রাখার পাশাপাশি ক্যান্সার প্রতিরোধ করে থাকে।
  • ৮। লেবুর শরবত
প্রতিদিন লেবু মেশানো পানি খেলেও কিডনি পরিষ্কার হয়। লেবুতে যে এসিড উপাদান আছে তা কিডনিতে জমা হওয়া পাথর ভাঙতে বেশ কার্যকর। লেবুতে যে সাইট্রাস উপাদান আছে তা কিডনিতে থাকা ক্রিস্টালদের পরস্পরের জোড়া লাগতে বাধা দেয়।
  • ৯। আদা
কিডনিকে আরো কার্যকরী করতে আদা খাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ কিডনিকে ভালো রাখতে আদা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আদা কিডনিতে রক্তের চলাচল বাড়িয়ে কিডনিকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এর ফলে কিডনির কর্মক্ষমতা আরো বেড়ে যায়। যদি নিয়মিত কাঁচা আদা কিংবা জুস করে খাওয়া যায় তাহলে তা কিডনি পরিষ্কারের ভূমিকা রাখে।

কিডনি রোগের ঔষধের নাম।ঃ

আমরা আপনাকে আজকে জানাবো কিডনি রোগের ওষুধের কার্যকরী নাম গুলো। মানুষের দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের একটি হল কিডনি। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা, খাদ্যভাস, দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন রোগ সহ (যেমন রক্তচাপ, বহুমূত্র ইত্যাদি) নানা কারণে কিডনিজনিত জটিল রোগ দিন দিন বেড়েই চলেছে।

এরই মধ্যে যারা কিডনি জনিত জটিল রোগে ভুগছেন, তারা ওষুধ খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন। কিডনি রোগের ঔষধ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। তবে অনেকেই কিডনি রোগের মেডিসিনের নাম জানতে চায়। এলোপ্যাথিক ও হোমিওপ্যাথিক উভয় প্রকারের কিডনি রোগের ওষুধের নাম জানবো নিজের আলোচনায়।

এপিস মেলিফিকা (Apis Mallifica)
রোগীর প্রসাবে এলবুমিন ও রক্তে রেনাল করপাসলের উপস্থিতি বিদ্যামান থাকলে এপিস মেলিফিকা ব্যাহত হয়। প্রসবের পরিমাণ কম হওয়ার পাশাপাশি ঘাড়ে ও মাথায় ব্যথা থাকলে এই ওষুধ ডাক্তারের নির্দেশ করে।

বেলাডোনা (Belladona)
কিডনির কটি দেশীয় সহ বিভিন্ন অংশে হালকা বা মাঝারি মানের ব্যথার উপসর্গ হিসেবে ডক্টর বেলেডোনা পরামর্শ দেন।

কোনাভ্যালারিয়া (Conavalleria)
অনেক সময় হৃদপিন্ডের বিভিন্ন সমস্যা হয়। ফলে হৃৎপিণ্ডে অকার্যকর হয়ে যেতে পারে সাময়িক। হৃদপিন্ডের এই অকার্যকর অবস্থা থেকে কিডনিতে দীর্ঘমেয়াদী নেফাইটিস হতে পারে। নেফাইটিসের জন্য কোনাভ্যালারিয়া এক অব্যর্থ ওষুধ।

শেষ কথাঃ

সম্মানিত পাঠক, আমরা আপনাদেরকে জানিয়েছি কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায়, কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ, কিডনির সমস্যা হলে কোথায় কোথায় ব্যথা হয়, এবং কিডনি পরিষ্কার করে এমন ৯ ধরনের খাবার ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেছি। আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন। উপরোক্ত বিষয়গুলি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়লে উপকৃত হবেন। 

আমার আর্টিকেলটি পড়ে সত্যিই যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার বন্ধু বান্ধবের সাথে শেয়ার করবেন যাতে করে তারাও উপকৃত হতে পারে। আর আপনারা কি ধরনের আর্টিকেল পড়তে চান, নিচে কমেন্ট বক্সে একটি মতামত জানিয়ে দিবেন।

জীবনকে সহজ করুন, (রাত্রি গ্রুপের) সাথে থাকুন। সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে এখানে বিদায় নিচ্ছি আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url